undefined_give_me_samiler_imag

অসীম বাণী

যিনি তোমাকে হরহামেশা অবলোকন করেছেন, তার দিকে চোখ ফিরিয়ে রাখো।

যিনি তোমার সামনে আছেন,তাকে সবসময় সামনে রাখো।

যিনি তোমাকে মহাব্বত করেন,তোমার উচিত তাকে মহাব্বত করা।

যিনি তোমাকে ডাকেন,তোমার উচিত তার ডাকে সারা দেওয়া।

যিনি তোমাকে হিজরত করেছেন তোমার উচিত তার কুদরতি হাতে নিজেকে সোপর্দ করে দেওয়া।

ঈমানদার সবসময় মহান আল্লাহ তাআলার উপর নির্ভর করে আর মুনাফেক নির্ভর করে তার ধন সম্পদের উপর।

যে লোক নিজেকে শিক্ষা দিতে পারেনা সে অপরের শিক্ষক হবেন কি করে?

যে আল্লাহ তায়ালা কে ভয় করে সে বিনয়ী হয়

Muslim Man Praying, Hand Drawn Sketch Vector Background.

সমর্পণ: হিন্দু, বৌদ্ধ ও ইসলাম ধর্মে আত্মনিবেদন ও আধ্যাত্মিক মুক্তির পথ

সমর্পণ বা আত্মনিবেদন – এটি শুধু একটি আচার বা বিশ্বাস নয়, বরং আত্মার একটি গভীর অভিব্যক্তি। মানবজীবনের সীমাবদ্ধতা, অহংকার ও ভোগ-বাসনার ঊর্ধ্বে উঠে যখন একজন ব্যক্তি নিজেকে ঈশ্বর বা চূড়ান্ত সত্যের হাতে সঁপে দেয়, তখনই ঘটে প্রকৃত সমর্পণ। হিন্দু, বৌদ্ধ ও ইসলাম – এই তিনটি ধর্মেই সমর্পণকে আধ্যাত্মিক উন্নতির গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হয়েছে। চলুন জেনে নিই, এই ধর্মগুলোতে সমর্পণের ব্যাখ্যা কীভাবে করা হয়েছে।

🕉 হিন্দু ধর্মে সমর্পণ

হিন্দু ধর্মে ভক্তি যোগ-এর মূল ভিত্তি হলো সমর্পণ। ভগবানের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস, ভালোবাসা ও আত্মনিবেদন – একে বলা হয় “শরণাগতি”।

ভগবদ্ গীতা-তে কৃষ্ণ বলেন:

“সর্বধর্মান্ পরিত্যজ্য মামেকম্ শরণং ব্রজ”
(সব ধর্ম ত্যাগ করে শুধু আমারই শরণ নাও।)

হিন্দু দর্শনে সমর্পণ মানে ঈশ্বরের ইচ্ছাকে গ্রহণ করা, তাঁর ইচ্ছার উপর আস্থা রাখা, এবং নিজের কর্মফল ঈশ্বরকে উৎসর্গ করা। এটি কেবল বাহ্যিক আচরণ নয়, বরং অন্তরের এক নিঃশর্ত আহ্বান।

☸ বৌদ্ধ ধর্মে সমর্পণ

বৌদ্ধ ধর্মে সমর্পণ কোনো সৃষ্টিকর্তার কাছে নয়, বরং চেতনার মুক্তি ও আত্ম উপলব্ধি-র উদ্দেশ্যে। বৌদ্ধরা তিনটি আশ্রয়ে (ত্রিশরণে) সমর্পণ করেন:

বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি (বুদ্ধের শরণে যাই)
ধর্মং শরণং গচ্ছামি (ধর্মের শরণে যাই)
সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি (সঙ্ঘের শরণে যাই)

এখানে সমর্পণ মানে নিজ অহংকার ও মায়ার বন্ধন ত্যাগ করে চেতনায় উত্তরণ। এটি একটি সচেতন সিদ্ধান্ত, যেখানে ব্যক্তি দুঃখ, তৃষ্ণা ও অজ্ঞতা থেকে মুক্তির জন্য জ্ঞান ও অনুশীলনের পথে নিজেকে নিবেদিত করেন।

☪ ইসলাম ধর্মে সমর্পণ

“ইসলাম” শব্দের অর্থই হল – আত্মসমর্পণ। এখানে সমর্পণ মানে একজন ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছার সামনে নিজের ইচ্ছাকে সম্পূর্ণরূপে সঁপে দেওয়া।

কুরআন-এ বলা হয়েছে:

“নিশ্চয়ই যারা বলে, ‘আমরা মুসলিম হয়েছি’ এবং নিজেদেরকে আল্লাহর কাছে সমর্পণ করেছে, তাদের জন্য রয়েছে পুরস্কার।” (সূরা বাকারা ২:১১২)

মুসলিমদের পঞ্চস্তম্ভের প্রতিটি – শাহাদাহ, সালাত, রোজা, যাকাত ও হজ – আসলে আল্লাহর প্রতি সমর্পণেরই বিভিন্ন রূপ। এখানে সমর্পণ শুধু বাহ্যিক আচরণ নয়, বরং অন্তরের ইমান, আনুগত্য ও আস্থা প্রকাশ।

🔗 শেষ কথা

সমর্পণ – তিনটি ধর্মেই একেকভাবে প্রকাশ পেলেও মূল সুর এক: অহংকার ত্যাগ করে, নিজেকে বৃহত্তর কোনো সত্য বা উদ্দেশ্যের হাতে তুলে দেওয়া। হিন্দু ধর্মে এটি ভক্তির রূপ, বৌদ্ধ ধর্মে এটি আত্মজয় ও মায়ার পরিত্যাগ, আর ইসলাম ধর্মে এটি ঈশ্বরের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য।

ইসলাম শব্দের অর্থ শান্তি
যারা শান্তির ধর্ম পালন করে তারা তারা মুসলমান। মুসলমান শব্দের অর্থ আত্মসমর্পণকারি।